• বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১  |   ২৯ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

ডিমলায় নৌকায় চড়ে গদিতে বসতে মরিয়া প্রার্থীরা

  মো. রেজোয়ান ইসলাম, নীলফামারী

০৭ জুন ২০২৩, ১৪:১১
ডিমলায় নৌকায় চড়ে গদিতে বসতে মরিয়া প্রার্থীরা

সদ্য ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী আগামী মাসের ১৭ তারিখ অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে নীলফামারীর ডিমলা উপজেলার তিন ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন। বিএনপি এ নির্বাচনে দলীয়ভাবে অংশ না নেওয়ায় একচেটিয়া মাঠে নৌকার সম্ভাবনা বেড়ে গেছে। তাই ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেতে দলটির নেতাদের মধ্যে মরিয়া চেষ্টা লক্ষ্য করা যাচ্ছে।

দলীয় মনোনয়ন পেতে আকাশ পথে যাত্রা করে ভিড় জমাচ্ছে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে। তৃণমূল থেকে নাম তালিকা চূড়ান্ত করে পাঠানো হয়েছে কেন্দ্রে।

তফসিল অনুযায়ী উপজেলার ৫নং গয়াবাড়ী ইউনিয়ন, ৯নং টেপাখড়িবাড়ি ইউনিয়ন এবং ৪নং খগা খড়িবাড়ী ইউনিয়নের ১৭ জুলাই ভোটগ্রহণ নাম তালিকায় প্রকাশ করেন ইসি।

এরেই প্রেক্ষিতে গয়াবাড়ী ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন প্রত্যাশী আমজাদ হোসেন সরকার, সাবেক চেয়ারম্যান মো. শরীফ ইবনে ফয়সাল (মুন) এবং আরেক প্রার্থী আনোয়ারুল হক সরকার (লেবু)।

বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রার্থীর আবেদন পত্রের তথ্যানুযায়ী জানা গেছে, আমজাদ হোসেন সরকার পারিবারিকভাবে আওয়ামী রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত। ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধে সংগ্রাম কমিটির ছাত্র সংগঠন নেতৃত্ব দিয়েছেন এবং ভারতে অবস্থান করে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে মুক্তিযোদ্ধাদের সহায়তা করে। ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নৃশংস হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদ সংগ্রামে অংশ নেন।

২০০১ ও ওয়ান ইলেভেনে বিএনপি-জামায়াত বিরোধী আন্দোলন এবং শেখ হাসিনার মুক্তির জন্য রাজপথ দখলসহ সে সময়ে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগকে করেন সুসংগঠিত। ১৯৯১-২০১৮ সাল পর্যন্ত দীর্ঘ ২৭ বছর ইউনিয়ন পরিষদে ইউপি সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হন।

আরও জানা যায়, ওয়ান ইলেভেনে তৎকালীন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মিজানুর রহমান তাকে চেয়ারম্যান হিসেবে তিন মাসের লিখিত দায়িত্ব অর্পণ করেন। বর্তমানে আমজাদ হোসেন সরকার গয়াবাড়ী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি। বিএনপি জামায়াত জোট সরকারের আমলে একাধিকবার হামলা ও নির্যাতনের স্বীকার হয়েছেন।

শরীফ ইবনে ফয়সাল মুন ছিলেন গয়াবাড়ী ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান। ২০১১ সালে প্রথম চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েই একাধারে চেয়ারম্যান হিসেবে ৮ বছর দায়িত্ব পালন করেন। বর্তমানে তিনি গয়াবাড়ী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সদস্য এবং উপজেলা স্বেচ্ছাসেবকলীগের আহবায়ক কমিটির অন্যতম সদস্য। এছাড়াও তিনি বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতৃত্ব দিচ্ছেন।

আনোয়ারুল হক সরকার (লেবু) সরাসরি নেতৃত্ব দিয়েছেন ইউনিয়ন ছাত্রলীগকে। পরে ১৯৯৮ সালে উপজেলা ছাত্রলীগের অন্যতম সদস্য থেকে বিদায় নিয়ে ২০০৪ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত গয়াবাড়ী ইউনিয়ন যুবলীগের অর্থ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। বর্তমানে তিনি উপজেলা আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা এবং ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ সভাপতির দায়িত্বের কথা বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রার্থীর আবেদন পত্রের তথ্যানুযায়ী জানা গেছে। তিনিও পারিবারিকভাবে আওয়ামী ঘরানার রাজনীতিতে সম্পৃক্ত।

টেপাখড়িবাড়ি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন প্রত্যাশী মো. ময়নুল হক, মো. রফিকুল ইসলাম (রফিক), মো. হারুন অর রশিদ।

টেপাখড়িবাড়ি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন নৌকার মাঝি প্রার্থী বর্তমান চেয়ারম্যান মো. ময়নুল হকের প্রাথমিক পরিচয়ে জানা গেছে, তিনি ছাত্রলীগের মাধ্যমেই পদার্পণ করেন রাজনৈতিক অঙ্গনে। ছাত্র রাজনীতিতে টেপাখড়িবাড়ি ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক, উপজেলা শিক্ষা ও পাঠচক্র সম্পাদক ও জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি।

বর্তমানে ইউনিয়ন ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য এবং বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের ডিমলা উপজেলার যুগ্ম আহবায়ক। এছাড়াও তিনি বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের উপদেষ্টা ও আজীবন সদস্য হিসেবে সম্পৃক্ত।

আলোচনায় রয়েছে টেপাখড়িবাড়ি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. রফিকুল ইসলাম (রফিক)। তিনিও ছাত্রলীগের রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত। ১৯৯৫ থেকে ২০০৫ সাল পর্যন্ত ইউনিয়ন যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক। ২০০১ সালে জাতীয় নির্বাচনের পরে বিএনপি-জামাত জোট সরকার বিরোধী আন্দোলনে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেন।

বিএনপি-জামায়াতের দ্বারা রাজনৈতিকভাবে পাশবিক নির্যাতন ও মামলা হয় তার নামে পরে রাজনৈতিক কারণে করেছেন কারাবরণ। বর্তমানে তিনি টেপাখড়িবাড়ি ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন।

এছাড়াও টেপাখড়িবাড়িতে চেয়ারম্যান পদে মো. হারুন অর রশিদ নামে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী এক প্রার্থী আবেদন করেছেন। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, তিনি আওয়ামী পরিবারের সন্তান এবং বর্তমানে টেপাখড়িবাড়ি ইউনিয়ন কৃষক লীগের সভাপতি।

খগাখড়িবাড়ী ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন নৌকার মাঝি প্রার্থী মো. জাহাঙ্গীর আলম ছাত্রলীগের রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত ছিলেন ছাত্রজীবনে। বর্তমান খগাখড়িবাড়ী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি। গত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে নৌকা প্রতীকে আনুমানিক দুইশত ভোটের ব্যবধানে পরাজিত হন তিনি।

আরিফুর রহমান আরিফ ছাত্রলীগের ইউনিয়ন ও কলেজ পর্যায়ে বিভিন্ন দায়িত্ব পালন শেষে উপজেলা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক নির্বাচিত হন। পরে খগা খড়িবাড়ি ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি এবং বর্তমানে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করছেন। রাজনৈতিক জীবনে একাধিকবার বিএনপি জামায়াতের রোষানলে পড়ে এবং তাদের অতর্কিত হামলায় রক্তাক্ত অবস্থায় রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তিন মাস চিকিৎসাধীন থেকে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসেন।

মো. হামিদুল ইসলাম নামে আরেক নৌকা প্রত্যাশীর সাথে মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তা আর সম্ভব হয়নি।

উল্লেখ্য, ইসির নির্বাচন ব্যবস্থাপনা শাখার উপ-সচিব মো. আতিয়ার রহমান দৈনিক অধিকারকে বলেন, তফসিল অনুযায়ী মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ দিন ১৮ জুন, মনোনয়নপত্র বাছাই ১৯ জুন ও প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ দিন ২৫ জুন। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: inbox.odhikar@gmail.com

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড