• শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১  |   ৩৯ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

ভোট চুরির মহোৎসব: জিয়া থেকে খালেদা জিয়া

  বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব আবু আহমেদ মন্নাফী

১৬ অক্টোবর ২০২৩, ২০:০৮
বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব আবু আহমেদ মন্নাফী

১৯৫৭ সালে ২৩ শে জুনে মীরজাফরের ভূমিকায় স্বাধীন বাংলাদেশে অবতীর্ণ হয়েছিলো খুনি জিয়া।সে রাষ্ট্রক্ষমতায় থাকাকালে এমন কিছু পদক্ষেপ নিয়েছিল যেগুলো বাংলাদেশের ইতিহাসকে কালিমালিপ্ত করেছে। ১৯৭৭ সালে ৩০ শে মে বাংলাদেশের গণতন্ত্রের ইতিহাসে সবচেয়ে কালো দিন। বাংলাদেশ আর্মি অ্যাক্ট ২৯২ ও ২৯৩ বিধিতে স্পষ্টভাবে বলা হয়েছে, সামরিক বাহিনীর কোনো সদস্য তার চাকুরির মেয়াদ শেষ না হওয়া পর্যন্ত কোনো নির্বাচনে প্রার্থী হতে পারবেন না। জিয়াউর রহমান ১৯৭৭ সালে সামরিক বাহিনীতে স্বঘোষিত সেনাপ্রধান হিসেবে কর্মরত ছিল।সেজন্য হ্যাঁ/না ভোটে প্রার্থী হয়ে নির্বাচন করা ছিল সম্পূর্ণ বে-আইনি এবং শাস্তিযোগ্য অপরাধ। আইনগতভাবেই সে অবৈধ রাষ্ট্রপতি।

১৯৭৮ সালের ২১ এপ্রিল প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করা হয়। প্রায় ৪০ দিন পর জুনের ৩ তারিখে নির্বাচন। সেদিন জিয়াউর রহমানের জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক দল (জাগদল) সহ ৬টি রাজনৈতিক দলের সমন্বয়ে জাতীয়তাবাদী ফ্রন্ট গঠিত হয়।

১৯৭৮ সালের ৩ জুন এমন একটি দিন গণতন্ত্রের হন্তারক ও স্বৈরাচারী ব্যবস্থার জনক জিয়া ওইদিন সেনাপ্রধানের পদে থেকে নাটকীয় এক প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে অংশ নেয়।পাকিস্তানি কায়দায় অনুষ্ঠিত রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে স্বাধীন বাংলাদেশে প্রথম হ্যাঁ/না ভোটের মাধ্যমে জনগণের মৌলিক ভোটাধিকার চুরি করে জিয়াউর রহমান। ভোট গ্রহণের দায়িত্বে নিয়োজিত প্রিজাইডিং ও পোলিং অফিসাররা ‘হ্যাঁ’ ভোটের বাক্স ভরে দিয়েছিল। ভোটারবিহীন নির্বাচনে সামরিক, বেসামরিক কর্মকর্তারা তাদের চাকরি বাঁচাতে একপ্রকার বাধ্য হয়েই জিয়ার পক্ষে নগ্নভাবে ব্যালটে সিল মারতে হয়েছিল।সেই প্রহসনের নির্বাচনে আগে থেকেই জিয়াউর রহমান তার প্রতিদ্বন্দ্বী জেনারেল আতাউল গণি ওসমানী এর বিপক্ষে নিজের বিজয় নির্ধারণ করে রাখে।গনতন্ত্রের ইতিহাসে এমন নজির কোথাও খুঁজে পাওয়া যাবে না। গণভোটের নামে ভোট চুরির মহোৎসব হয়। হ্যাঁ পক্ষে গণজোয়ার দেখানো হয়। ভোট কেন্দ্রে কোনো ভোটার উপস্থিত না হলেও ভোটের বাক্স সরকারি কর্মকর্তারা ভরে দিয়েছিল। দুই শতাংশ ভোটার উপস্থিত না হলেও উপস্থিতির হার দেখানো হয় ৮৮.১ শতাংশ। আর প্রদত্ত ভোটের ‘হ্যাঁ’ অর্থাৎ জিয়ার পক্ষে দেখানো হয় ৯৮.৯ শতাংশ।

জিয়া ক্ষমতায় থেকে দল গঠন করে। প্রথমে জাগদল, পরবর্তীতে বিএনপি প্রতিষ্ঠা করে। বিএনপিকে ক্ষমতায় আনতে সামরিক বাহিনীকে ব্যবহার করে ১৯৭৯ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি জাতীয় সংসদ নির্বাচন করে। সেটা ছিলো ভোট চুরির আরেকটি মহোৎসব। সেখানে ক্ষমতার অপব্যবহার করে সম্পূর্ণ অনৈতিকভাবে মুসলিম লীগ, জামায়াতে ইসলামী, পিডিপি ও নেজামে ইসলামের মতো দলগুলোকে নির্বাচনের সুযোগ দিয়ে যুদ্ধাপরাধের দায়ে অভিযুক্ত ব্যক্তিদের সংসদে আসার সুযোগ করে দেয়। ভোট চুরির মাধ্যমে জিয়া নিজের প্রতিষ্ঠিত দল বিএনপিকে ২০৭টি আসনে বিজয়ী ঘোষণা করে। বিএনপির টিকিটে বিরাট সংখ্যক যুদ্ধাপরাধের দায়ে অভিযুক্ত ব্যক্তিদের সংসদে নিয়ে আসা হয়। সামরিক জান্তা এরশাদ ও “১০ টি হোন্ডা ২০ জন গুন্ডা নির্বাচন ঠান্ডা”এই কায়দায় খুনি জিয়ার পদাঙ্ক অনুসরণ করে নির্বাচন ব্যবস্থাকে ধংস করেছে।

সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতা দখল করা জিয়াউর রহমানের পুনারাবৃত্তি ঘটায় খালেদা জিয়া ১৯৯৬ সালের ১৫ ই ফেব্রুয়ারি এক তরফা নির্বাচনের মাধ্যমে ।তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রসঙ্গে খালেদা জিয়া বলেছিল, কেউ নিরেপক্ষ হতে পারে না, শিশু আর পাগল ছাড়া কেউ নিরেপক্ষ নয়। দেড় কোটি ভূয়া ভোটার বানিয়ে ২০০৭ সালে ২২ জানুয়ারী জাতীয় সংসদ নির্বাচন করার চেষ্টা করে খালেদা- তারেক। এখন তারাই আবার তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা চায় এ যেন ভূতের মুখে রাম রাম। পরিশেষে বলতে চাই,পাগলে কিনা কয়, ছাগলে কিনা খায়।

লেখক: সভাপতি, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগ।

চলমান আলোচিত ঘটনা বা দৃষ্টি আকর্ষণযোগ্য সমসাময়িক বিষয়ে আপনার মতামত আমাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ। তাই, সরাসরি দৈনিক অধিকারকে জানাতে ই-মেইলকরুন- inbox.odhikar@gmail.com আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: inbox.odhikar@gmail.com

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড