• বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১  |   ২৯ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

বিএনপি, ফায়াররিস্ক ট্রমা ও সাধারণ মানুষ

  দেওয়ান সাবাব

০৮ ডিসেম্বর ২০২২, ১৫:৩২
বিএনপি, ফায়াররিস্ক ট্রমা ও সাধারণ মানুষ
দেওয়ান সাবাব (ছবি : সংগৃহীত)

মানব সভ্যতার অন্যতম আবিষ্কার ধরা হয় আগুন বা অগ্নিশিখা। যে শিখার ছোঁয়ায় মানুষ আধুনিকতার আভাস পেয়েছে দ্বার খুলেছে নতুন দিনের, পেরিয়েছে প্রাচীন ও মধ্যযুগ। সে আগুনের শিখাকে অস্ত্র হিসেবে নিয়ে মধ্যযুগীয় কায়দায় দেশের মানুষের উপর হামলা চালিয়েছে বিএনপি।

বিএনপি বা বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল সৃষ্টিলগ্ন থেকে বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে রাষ্ট্রীয় দায়িত্বে এসেছে বা আসার চেষ্টা চালিয়েছে। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যার পর জিয়াউর রহমান অগণতান্ত্রিকভাবে বাংলাদেশ সরকারের ক্ষমতায় দখল করেন। ক্ষমতার আসার পরই ১৯৭৮ সালে একটি রাজনৈতিক দলের জন্ম দেন জিয়া। যার নাম দেন বিএনপি বা বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল।

এই দলটি সৃষ্টির প্রেক্ষাপট বিবেচনা করলে দেখা যাবে, গণপ্রজাতন্ত্রী স্বাধীন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠায় সাধারণ জনগণের জনমত নিয়ে যে দলটি নেতৃত্ব দিয়ে এসেছিল তার নাম বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ। সে দলটিকে প্রথমে নেতৃত্ব শূন্য করার লক্ষে ১৯৭৫ সালের ১৫ই অগাস্ট বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যাসহ ৩রা নভেম্বর জাতীয় চার নেতা হত্যা ও আরও তৃণমূল পর্যায়ের নেতাকর্মীদের হত্যা করা হয়েছিল।

সেই সময় জিয়া রহমান বিএনপির মাধ্যমে দেশের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃত করার অপচেষ্টা চালান। পরবর্তী সময়ে দেখা যায় যারা এই সকল হত্যাযজ্ঞ চালিয়েছে সেই সকল সেনা অফিসারদের দেশের বাহিরে চাকরির ব্যবস্থা করে দেন জিয়ার সরকার। বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধের যে দলটি বিরোধিতা করেছিল রাজাকার আলবদর আল শামস শান্তি বাহিনী গঠন করে দেশে হত্যাযজ্ঞ গুন খুন ধর্ষণের মতো অপরাধ চালিয়েছিল তার নাম জামায়াত ইসলাম।

জিয়া জামায়াতের নেতা রাজাকার আলশামস আলবদরদের আবারও রাজনীতি করার সুযোগ সৃষ্টি করে দেন।এমন ভাবে তাদের হাতেও স্বাধীন বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব দেওয়া হয় তারা যেন জিয়ার সরকারের বিশ্বস্ত সহচর।এভাবেই জান্তা সরকারের উদরে বিএনপি নামক দলটির প্রতিষ্ঠা ঘটে।

তাদের উত্তরসূরিদের মতো করে জিয়ার স্ত্রী খালেদা জিয়া ও তার ছেলে তারেক রহমানের হাত ধরে বিএনপি আবার ক্ষমতায় আসে ক্ষমতায় আসার পর আবারও দেশের স্বাধীনতার স্বপক্ষ শক্তির উপর জিয়ার মতোই চড়াও হয়। যারা মুক্তিযুদ্ধ করে দেশকে স্বাধীন করেছেন তাদের উপর অত্যাচার নিপীড়ন চালায়।

পরবর্তী সময়ে ২০০৪ সালের ২১ অগাস্ট একই কায়দায় আওয়ামী লীগের জনসভায় গ্রেনেড হামলা চালানো হয়।টার্গেট করা হয় বঙ্গবন্ধু কন্যা বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি জননেত্রী শেখ হাসিনাকে, যিনি ১৯৭৫ এর ১৫ আগস্ট দেশের বাহিরে অবস্থানের জন্যে প্রাণে বেঁচে যান। সে হামলায় সৌভাগ্যক্রমে তিনি আবার প্রাণে বেঁচে যান। কিন্তু ঘটনাস্থলেই আওয়ামী লীগের আইভি রহমানসহ অসংখ্য নেতাকর্মী নিহত ও আহত হন।

পরবর্তীকালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর বিএনপি হরতাল নামক আন্দোলন শুরু করে যে আন্দোলনে তারা টার্গেট করে গণপরিবহন ব্যক্তিগত পরিবহন। তাদের অস্ত্র আগুন।

২০১৩, ২০১৪, ২০১৫ সালের দিকে হরতালের নামে আগুনে পুড়িয়ে ঝলসে দেওয়া হয় সাধারণ মানুষকে। যে সাধারণ মানুষের ভোটে ২০০৮ সালে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে সরকার গঠন করে পরবর্তী সময়ে বিএনপি নির্বাচনে হেরে যাওয়া ও ক্ষমতা হারিয়ে ফেলায় হরতালের মাধ্যমে সাধারণ মানুষের উপর মধ্যযুগীয় কায়দায় অগ্নিসন্ত্রাসী কার্যক্রম চালায়। এ ধরনের অমানবিক কার্যক্রমে আবারও বিএনপির সহযোগী হিসেবে কাজ করে ৭১ এর পরাজিত শক্তি জামায়াত ইসলাম।

সময়ের শুধু ভিন্নতা ছিল, ৭১ সালে মানুষ যেমন রাস্তায় বের হয়ে ভয় পেত যেন কখন তাকে ধরে নিয়ে মেরে ফেলা হয় ঠিক তেমনিভাবে ২০১৩,২০১৪,২০১৫ সালে মানুষের মধ্যে ‘ফায়াররিস্ক ট্রমা’ সৃষ্টি হয়, যেখানে মানুষ রাস্তায় বের হলেই মধ্যযুগীয় কায়দায় আগুনে পুড়ে মরতে হয়।

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগেভাগেই দেশের সমসাময়িক পরিস্থিতিতে সাধারণ মানুষের প্রশ্নের আঙুল বিএনপির দিকে আবারও কি ভুগতে হবে ‘ফায়াররিস্ক ট্রমা’তে!

লেখক : দেওয়ান সাবাব, সাবেক সহ সম্পাদক, কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ।

চলমান আলোচিত ঘটনা বা দৃষ্টি আকর্ষণযোগ্য সমসাময়িক বিষয়ে আপনার মতামত আমাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ। তাই, সরাসরি দৈনিক অধিকারকে জানাতে ই-মেইলকরুন- inbox.odhikar@gmail.com আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: inbox.odhikar@gmail.com

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড