নির্জনা বড়ুয়া তোফা
বছর পঞ্চাশের পর, যখন আমার বয়স হবে সত্তর! তখন একটি গল্প বলবো উনিশের ধর্ষিতার। মেয়েটার নাম ছিল ‘নিরুপমা’ মনে ছিল তার অদম্য সাহস, চোখে ছিল স্বপ্নের রাজ্য। নিরুপমার বয়স যখন কুড়ি সঠিক, পারি দিল পরিবারের নিরাপত্তার চৌকাঠ। হাজারো স্বপ্নের পুঁজি নিয়ে পারি জমালো জমকালো শহরে! চলছিল বেশ বিশ্ববিদ্যালয়ের দিনগুলো- হঠাৎ, কোনো এক রাতের অন্ধকারে, সময় তখন ৯টা কি ১টা! গিয়েছিল সে বাবার ঔষধের সন্ধানে।
নিরুপমা স্বীকার হলো মানুষরূপী দানবের খপ্পরে! চূর্ণ বিচূর্ণ করে ছিঁড়ে খেল তার শরীর! যন্ত্রণার একটা শব্দেরও বহিঃপ্রকাশ করতে দেওয়া হলো না তাকে। সমাজের বিষ চক্ষু সবার আগে মেরে ফেলল তাকে! তাকে নতুন নামের আখ্যান দিল ‘ধর্ষিতা’।
ধর্ষিতা নিরুপমা!
উনিশ গেল বিশ গেল গতানুগতিক ভাবে কেটে গেলো কয়েকটা বছর! নিরুপমার বিচার হলো না। চাতক পাখির মতো চেয়ে থাকলো কখন সেই মুক্তি পাবে, দেখতে পাবে দানবগুলোর মৃত্যু যন্ত্রণা! ফলাফল ‘কিছুই হলো না’!
নিরুপমা এবার শপথ নিলো, বাঁচবে সে থেতলিয়ে দিবে সমাজের বিষ চক্ষু, মৃত্যুর থেকেও ভয়ঙ্কর পরিণতি করবে মানুষ রুপি দানবদের! সাল তখন ২০৩০ পত্রিকায় ছাপানো হলো, সামাজিক মাধ্যমে ঝড় উঠলো উনিশ এ ঘটে যাওয়া রাতের অন্ধকারে সেই ধর্ষকদের জনসম্মুখে মৃত্যুদণ্ডের রায় দেওয়া হয়েছে! এতবছর পর এই রায়ের প্রবর্তন করলো ধর্ষিতা নিরুপমা!
নিরুপমা আজ বিচারক! ধর্ষিতা নিরুপমা আজ বিচারক সমাজের বিষ চক্ষুরা আজ তার কাছে নত। একটি শব্দের বিকল্পে আজ হাজারো প্রতিবাদের প্রতিধ্বনি ওঠে নিরুপমার নামে! দানবেরা আজ নিরুপমার নামে কেঁপে কেঁপে উঠে! আজ লাখো জনসম্মুখে দাঁড়িয়ে নিরুপমা তুমুল কণ্ঠে গর্জে উঠে বলে ‘ধর্ষিতারা জেগে উঠো’ জেগে ওঠো! আমিই ডাকছি তোমাদের হ্যাঁ, আমি আমিই সেই ‘ধর্ষিতা নিরুপমা’!
আরও পড়ুন : হিমা
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: inbox.odhikar@gmail.com
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড