এলিভ অবন্ত
একটি বালক। ছেলেবেলা তখন তার। রংপুর শহর। একদল আলোকিত মানুষের সান্নিধ্যে এই জীবনের তার এই বেলাটা ছিল পরিপূর্ণ। ওই বেলায় অর্থাৎ ছোটবেলায় স্বপ্ন ছিল কোনো কবি সাহিত্যিক কিংবা গায়ক হবে সে। অথবা হবে কোনো ডাক্তার।
ছোটবেলা থেকেই সাহিত্য এবং সংস্কৃত জগতে বিচরণের ফলে গান এবং মিউজিকের প্রতি ভক্তি ছিল অনেক বেশি। থিয়েটার করত সে, করত নানারকম সাংস্কৃতিক কার্যক্রম। ধ্যান-জ্ঞান সব কিছুই ছিল সহশিক্ষা কার্যক্রমকে ঘিরে।
পড়ালেখাতেও পটু এই ছেলেটির সবচেয়ে বেশি তাড়না যোগাত সঙ্গীত।
ডাক্তার হবার খেয়াল, সঙ্গীতের মায়াজাল, জীবনের নানা যাতনায় ভুলে যেতে হয়েছে। তবে নিজে পেশায় পুরোপুরি সংগীতে না থাকতে পারলেও তাকে সংগীত যোদ্ধা বলা যেতেই পারে। মিউজিক সে ছাড়েনি অথবা এভাবে বলা যেতে পারে তাকে মিউজিক ছাড়েনি।
নাম তার মেঘন। পুরো নাম খন্দকার মোহাম্মদ ফিলকুল আহমেদ। তারুণ্যের উদ্যম আর প্রজ্ঞা তার চলার পথের পাথেয় হয়েছে। তারই সাক্ষ্য একটি আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থায় কাজ করার পাশাপাশি তার নিজের চেষ্টা ও মেধায় গড়ে উঠা প্রতিষ্ঠান Ukulele Center Bangladesh। স্বপ্নযাত্রী হিসেবে তার এই প্রতিষ্ঠানটির যাত্রা ২০১৬ সালে।
মধ্যবিত্ত পরিবারে বেড়ে উঠা মেঘন যথারীতি স্কুলে থাকাকালীন সময়ে বিভিন্ন সাংস্কৃতিক কার্যক্রম থিয়েটার এবং গানবাজনায় দক্ষতার সাক্ষর রাখছিলেন। গিটার বাজিয়ে গান করে পাড়া মহল্লায় মাতিয়ে রাখতেন সেই বয়সেই।
অর্থের অভাবে ভালো গিটার কেনা হয়ে ওঠেনি স্কুল জীবনে। কিন্তু স্বপ্ন ছিল একদিন থাকবে তার অনেক অনেক গীটার। আছেও তাই। তার দুটি শোরুমে আর স্টোরে সাজানো থরে থরে গিটার। গিটার আর উকুলুকি রাখার নিত্য নতুন যায়গার অনুসন্ধান করতে হয় তাকে প্রতিনিয়ত।
ইউকেলেলে সেন্টার বাংলাদেশ যারা কি-না উন্নত মানের বাদ্যযন্ত্র সরবরাহ করে থাকে বিশেষ করে ইউকেলেলে। মেঘনের জন্য এটি একটি সাংস্কৃতিক আন্দোলন। Ukulele Center Bangladesh এর স্বপ্নদ্রষ্টা মেঘন হলেও এই স্বপ্ন এখন নানা চোখে ঘুরে ফিরে একাকার হয়ে গেছে।
Ukulele Center Bangladesh (ইউকেলেলে সেন্টার বাংলাদেশ) এর প্রতিষ্ঠাতা, নেশায় কণ্ঠশিল্পী এবং সংগীত পরিচালক মেঘন বলেন, আমাদের লক্ষ্য সারা বাংলাদেশে তরুণদের মাঝে ইউকেলেলে ছড়িয়ে দেয়া। জন্মলগ্ন থেকে এ পর্যন্ত আনুমানিক ২ লক্ষ ইউকেলেলে বিক্রি করেছে আমার গড়া এই প্রতিষ্ঠানটি। আমি জানাতে চাই, Ukulele Center Bangladesh (ইউকেলেলে সেন্টার বাংলাদেশ) এর মোট সম্পদ ৫ কোটির উপরে আলহামদুলিল্লাহ। তবে ব্যবসায়িক হিসেব নিকেশের বাইরে Ukulele Center Bangladesh (ইউকেলেলে সেন্টার বাংলাদেশ) সংগীতের মূর্ছনার মাধ্যমে দেশের অপার সম্ভাবনাময় তরুণদেরকে সম্পদ বানাতে চাই। চাই মানুষ আলোকিত হয়ে বিকশিত হোক, বিকশিত হয়ে মেধার বিচ্ছুরণ ঘটিয়ে সম্পদে পরিণত হয়ে সমাজ দেশ জাতি তথা মানবজাতির মাঝে আলোর ছটা ছড়িয়ে দিক।
আমাদের নতুন বছরের ব্রত ব্যবসায়িক সমৃদ্ধির পাশাপাশি সঙ্গীতপ্রেমী তরুণদেরকে উৎসাহিত করতে, আলোকিত করতে, তাদের লেখা গান, তাদের গাওয়া গান তৈরি করে সেটির ভার্চুয়াল মিউজিক ভিডিও তৈরির মাধ্যমে তরুণদেরকে সুযোগ দিয়ে আপামর মানুষের কাছে তাদের প্রতিভা পৌঁছে দিতে আমরা বদ্ধপরিকর।
Ukulele Center Bangladesh (ইউকেলেলে সেন্টার বাংলাদেশ) এর পিআর, ব্রান্ডিং এবং ডিজিটাল মার্কেটিং বিভাগের পরিচালক এবং গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব মোঃ তাজবীর হোসাইন (তাজবীর সজীব) বলেন, Ukulele Center Bangladesh (ইউকেলেলে সেন্টার বাংলাদেশ) এর প্রতিষ্ঠাতা এবং স্বপ্নদ্রষ্টা মেঘন ব্যক্তিগতভাবে আমার বন্ধু, আত্মার বন্ধু বা আত্মিক বন্ধু যাকে বলে সেটি। কলেজের পড়ার বেলায় আমাদের সাক্ষাৎ, আমাদের দুজনের স্বপ্নের সাক্ষাৎও সে বেলায়, কতশত স্বপ্নছবি দুজনে একসাথে এঁকেছি, অনেক কিছুই পূরণ হয়নি। জীবনের নিয়মে দুজনের দুপথ পেশাগত মেলবন্ধন পায়নি, কিন্তু আমাদের নেশা এক এবং অভিন্ন, সেটি হলো নিজেরা আলোকিত হওয়া এবং অন্যদের আলোকিত করা। অনেক বসন্ত আমাদের দেখা হয়নি, কথা হয়নি, তবুও আত্মিক টানেই বোধহয় আবার আমাদের মিলে গেছে বসন্ত। মিশে গেছি আবার। হয়ে একাকার।
আমি Ukulele Center Bangladesh (ইউকেলেলে সেন্টার বাংলাদেশ) এর দায়িত্বশীল হিসেবে চাই, মেঘনের ব্রতকে ঠিক রেখে আমাদের এই প্রতিষ্ঠানটির আন্দোলন আমরা আপামর মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে, পিআর মুভমেন্ট বাড়াটে চাই, তাহলেই মানুষ জানবে আমরা আলোকিত মানুষ গড়তে কাজ করছি। Ukulele Center Bangladesh এর ডিজিটাল মার্কেটিং নিয়ে অলরেডি প্যাশনিক এবং প্রফেশনালি কাজ করছি আমরা, আরও বেশি গতি সঞ্চার করা হবে এখানেও।
এছাড়াও আমরা কিছু ইভেন্ট, প্রতিযোগিতা এবং প্রজেক্ট হাতে নিতে চাই এই Ukulele Center Bangladesh এর আয়োজনে। আমি কোন দায়িত্ব পালন করছি তার চেয়েও বড় ব্যাপার Ukulele Center Bangladesh তথা মেঘনের আমি স্বপ্নসারথী।
Ukulele Center Bangladesh এ প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষভাবে আনুমানিক ৪০ জন কর্মরত রয়েছেন এখন, ডিজিটাল টার্ন বিডি ডিজিটাল পার্টনার হিসেবে রয়েছে প্রতিষ্ঠানটির সাথে সেখানেও প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষভাবে ৩০ জন কাজ করছেন, মেঘন এই প্রতিষ্ঠানটিরও একজন স্বপ্নসারথী।
Ukulele Center Bangladesh এর সিংহভাগ বাদ্যযন্ত্র বিদেশ থেকে আমদানিকৃত। কিছু কিছু বাদ্যযন্ত্র আছে যেগুলো দেশীয়। বাদ্যযন্ত্রের ক্ষেত্রে ইউকেলেলে সেন্টার বাংলাদেশ সামনে থেকে নেতৃত্ব দিচ্ছে।
বলেছি আগেই, পড়ালেখাতেও পটু ছিলেন তারই ফলস্বরূপ পড়েছেন নটরডেম কলেজে। নটরডেম কলেজে পড়ার সময় কলেজের সহশিক্ষা কার্যক্রমের অংশ হিসেবে বিজনেস ক্লাবের সম্পাদক পরবর্তীকালে ভারপ্রাপ্ত সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন মেঘন। একই সাথে উক্ত কলেজের কালচারাল ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন এবং ছিলেন কলেজের অন্যতম সক্রিয় সংগঠন ড্রামা ক্লাবের অন্যতম সদস্য।
জীবনের নানা মোড়ে নানা চড়াই উৎরাই পেরিয়ে চার্টাড অ্যাকাউন্টেন্সি পড়ে চার্টাড অ্যাকাউন্টেন্সি পেশার সাথে যুক্ত হয়ে জীবনযুদ্ধে তরতর করে তার এগিয়ে চলা।
একাডেমিক্যালি গ্রাজুয়েশন আইন বিষয়ে এবং পোস্ট গ্রাজুয়েশন ফাইন্যান্স এবং ব্যাংকিং বিষয়ে করেছেন।
জীবনের গল্প যেমন হয়, গল্পের মতন, মেঘনের জীবনটাও তাই। মেঘ সরিয়ে আজকের মেঘন। নানা মেঘ নানা সময় তার জীবনে হানা দিয়ে গেছে, এখনো দেই, তবুও মেঘ সরিয়ে এগিয়ে চলায় তার জীবনের ব্রত। আলোকিত হয়ে আলো ছড়িয়ে জগত আলোকিত করা তার জীবনের পাথেয়।
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: inbox.odhikar@gmail.com
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড