• শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১  |   ২৮ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

বাজেটে বাংলাদেশ ‘স্মার্ট’ হবে যেভাবে

  অর্থ-বাণিজ্য ডেস্ক

০২ জুন ২০২৩, ১১:৪২
বাজেটে বাংলাদেশ ‘স্মার্ট’ হবে যেভাবে

স্মার্ট বাংলাদেশ কেমন হবে এবং কীভাবে হবে সেটির একটি রূপরেখা প্রতিফলিত হয়েছে ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেটে। গতকাল বৃহস্পতিবার (১ জুন) জাতীয় সংসদে ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেট উত্থাপন করেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।

ডিজিটাল প্রেজেন্টেশনের মাধ্যমে তিনি সংসদে বাজেট, সরকারের অর্জন এবং স্মার্ট বাংলাদেশ কেমন হবে তার একটি ধারণা তুলে ধরেন।

অর্থমন্ত্রী জানান, আমরা ৪টি মূল স্তম্ভের ওপর ভিত্তি করে ডিজিটাল বাংলাদেশ গঠনের কাজ করেছি। এ চারটি স্তম্ভ হল-কানেকটিভিটি, দক্ষ মানবসম্পদ, ই-গভর্নমেন্ট ও আইসিটি ইন্ডাস্ট্রি প্রমোশন। চারটি ক্ষেত্রেই আমাদের অগ্রগতি ও অর্জন অভূতপূর্ব। ডিজিটাল বাংলাদেশের সফল বাস্তবায়নের ফলে চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা ও সম্ভাবনা কাজে লাগানোর শক্তি পাচ্ছি আমরা। পাশাপাশি এটি আমাদের একটি সাশ্রয়ী, টেকসই, উদ্ভাবনী, বুদ্ধিদীপ্ত ও জ্ঞাননির্ভর স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণের ভিত তৈরি করে দিয়েছে। এ ভিত্তির ওপর দাঁড়িয়ে ২০৪১ সাল নাগাদ উন্নত বাংলাদেশ বিনির্মাণের স্বপ্ন পূরণে ‘স্মার্ট বাংলাদেশ' গঠনের বর্তমান উদ্যোগসমূহ কার্যকর ভূমিকা রাখবে।

বাজেট উপস্থাপনায় বলা হয়, ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করার প্রাক্কালে জাতির সামনে রূপকল্প ২০২১ পেশ করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, যার মূল লক্ষ্য ছিল অর্থনৈতিকভাবে সমৃদ্ধশালী সমতাভিত্তিক ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণ। গত দেড় দশকে রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক, বৈজ্ঞানিক ও অবকাঠামোসহ সব ক্ষেত্রে যে অভূতপূর্ব অগ্রগতি সাধন করেছে তার মাধ্যমে ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত বাংলাদেশ বিনির্মাণের একটি টেকসই ভিত্তি স্থাপিত হয়েছে। ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত বাংলাদেশের লক্ষ্য অর্জনে প্রধানমন্ত্রীর চিন্তাপ্রসূত ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ গঠনের উদ্যোগসমূহ কার্যকর ভূমিকা রাখবে।

অর্থমন্ত্রী জানান, স্বপ্নের স্মার্ট বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠিত হবে চারটি মূল স্তম্ভের ওপর ভিত্তি করে। এগুলো হচ্ছে–স্মার্ট নাগরিক, স্মার্ট সরকার, স্মার্ট সোসাইটি ও স্মার্ট ইকোনমি।

অর্থমন্ত্রী আরও জানান, সার্বিক উন্নয়নে ডিজিটাল প্রযুক্তির ব্যবহার আমাদের সরকারের বিশেষ অঙ্গীকার। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শী নেতৃত্বে ও ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ এর ব্যানারে দেশে তথ্যপ্রযুক্তি খাতে অভাবনীয় অগ্রগতি হয়েছে। তথ্যপ্রযুক্তি অবকাঠামো দেশব্যাপী বিস্তৃত হয়েছে।

এর ব্যাপক ও বহুমুখী ব্যবহারে উচ্চ প্রবৃদ্ধি অর্জন সম্ভব হয়েছে, দারিদ্র্য হ্রাস পেয়েছে এবং সামাজিক গতিশীলতা বেড়েছে। প্রধানমন্ত্রীর দিকনির্দেশনায় আমরা এখন ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ গঠনের কাজ শুরু করেছি।

বাজেট বক্তৃতায় বলা হয়, ইতোমধ্যে বিস্তারিত কার্যক্রমসহ ‘স্মার্ট বাংলাদেশ: আইসিটি ২০৪১ মাস্টারপ্ল্যান’ প্রণয়ন করা হয়েছে। এ মহাপরিকল্পনায় দেশের জনগণকে উদ্ভাবন ও প্রযুক্তি জ্ঞানসম্পন্ন নাগরিক হিসেবে এবং প্রযোজ্য শতভাগ সেবাকে ডিজিটালাইজড করার লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে।

এ লক্ষ্য অর্জিত হলে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিশ্চিত হবে এবং জনগণ অতি সহজে সকল সেবা গ্রহণ করতে পারবে। সকল ক্ষেত্রে নাগরিকদের অংশগ্রহণে আমাদের অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়নের লক্ষ্য অর্জন সম্ভব হবে। প্রযুক্তির অভূতপূর্ব উন্নয়ন ও উদ্ভাবনে শিক্ষা, জীবন-জীবিকা, দক্ষতা, চিকিৎসা, শিল্পসহ সকল ক্ষেত্রে মানুষের জীবনযাত্রার আমূল পরিবর্তন ঘটবে।

দেশের জনগণকে স্বচ্ছতার সঙ্গে এবং সহজে সেবা প্রদান নিশ্চিত করা হবে ‘স্মার্ট সরকার’ এর মূল লক্ষ্য। দেশের জনগণকে তথ্যপ্রযুক্তি জ্ঞানসম্পন্ন ‘স্মার্ট সিটিজেন’ করে গড়ে তোলার লক্ষ্য নিয়ে নানা পদক্ষেপ হাতে নেওয়া হয়েছে।

‘স্মার্ট ইকোনমি'র অনুষঙ্গ হবে দ্রুত ও নিরাপদ লেনদেন, ক্যাশলেস সোসাইটি, স্টার্টআপ ইত্যাদি। ‘স্মার্ট ইকোনমি’তে ব্যবসা-বাণিজ্য, বিনিয়োগ সুবিধা দেশের সকল নাগরিকের জন্য সমানভাবে হাতের নাগালের মধ্যে থাকবে।

বাজেট বক্তৃতায় অর্থমন্ত্রী বলেন, আমাদের ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’-এ মাথাপিছু আয় হবে কমপক্ষে ১২ হাজার ৫০০ মার্কিন ডলার, দারিদ্র্য সীমার নিচে থাকবে ৩ শতাংশের কম মানুষ, আর চরম দারিদ্র্য নেমে আসবে শূন্যের কোঠায়। এছাড়া মূল্যস্ফীতি সীমিত থাকবে ৪-৫ শতাংশের মধ্যে; বাজেট ঘাটতি থাকবে জিডিপির ৫ শতাংশের নিচে।

অর্থমন্ত্রী আশা প্রকাশ করে বলেন, রাজস্ব-জিডিপি অনুপাত হবে ২০ শতাংশের ওপরে; বিনিয়োগ হবে জিডিপির ৪০ শতাংশ। শতভাগ ডিজিটাল অর্থনীতি আর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিভিত্তিক স্বাক্ষরতা অর্জিত হবে। সকলের দোরগোড়ায় স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে যাবে। স্বয়ংক্রিয় যোগাযোগ ব্যবস্থা, টেকসই নগরায়ণসহ নাগরিকদের প্রয়োজনীয় সকল সেবা থাকবে হাতের নাগালে। তৈরি হবে পেপারলেস ও ক্যাশলেস সোসাইটি। সবচেয়ে বড় কথা, স্মার্ট বাংলাদেশে প্রতিষ্ঠিত হবে সাম্য ও ন্যায়ভিত্তিক সমাজব্যবস্থা।

  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: inbox.odhikar@gmail.com

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড