মো. আকাশ, সিদ্ধিরগঞ্জ (নারায়ণগঞ্জ)
দেশের অন্যান্য অঞ্চলের মতো নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জেও কাঁচা মরিচের বাজারে উত্তাপ। খুচরা দোকানে কেজি বিক্রি হচ্ছে সর্বনিম্ন ৫৬০ টাকায়। এদিকে ক্রেতারা ক্রয়ে হিমশিম খেলেও বাজারের অধিকাংশ দোকানে নেই কাঁচা মরিচ।
আজ শনিবার ( ১ জুলাই) বিকালে চিটাগাংরোডস্থ কাঁচা বাজার, সিদ্ধিরগঞ্জ পুল বাজারসহ ফুটপাতের সরেজমিনে ঘুরে এমন দৃশ্যের দেখা মিলেছে।
দেখা গেছে, সবজির বাজারে চলমান আগুনে উত্তাপ বাড়িয়েছে কাঁচা মরিচ। যে মরিচের মূল্য ইদের দুদিন আগেও ছিলো ৪০০ টাকায়। অথচ ঈদের পরে মূল্য না কমে বাড়তে দেখা গেছেন। বর্তমানে ৫৬০ থেকে ৬'শ টাকা দরে বিক্রি করছেন খুচরা বিক্রেতারা।
দোকানিদের ভাষ্য, মূল্য বৃদ্ধি পেলেও পাইকারদের থেকে পরিমাণ মতো মরিচ ক্রয় করতে পারছেন না তারা। অন্যদিকে ক্রেতারা কেজি কিনতে ব্যর্থ হলেও একশো থেকে আড়াইশো গ্রামেই তরকারির ঝাল মিটাচ্ছেন বলে জানিয়েছেন একাধিক ক্রেতা।
এখানকার বাজারগুলো ঘুরে দেখা গিয়েছে। অন্যান্য সবজির মূল্য সহনীয় থাকলেও মরিচের ঝাঁজে পুড়ছে মানুষজন। ক্রেতারা বলছেন মাংসের দামের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বিক্রি হচ্ছে কাঁচা মরিচ।
বাজার করতে এসেছেন আবু বক্কর সিদ্দিক। তার সঙ্গে কথা বললে তিনি জানান, সারা মাস কর্ম করে ৮ হাজার বেতন পান তিনি। তাও আবার কুরবানির ইদে বেতন দেননি তাদের অফিস। শুধুমাত্র ইদ বোনাসের টাকায় ইদ করেছেন তার পরিবার।
বাসায় অন্যান্য বাজার থাকলেও মরিচের প্রয়োজনে বাজারে এসেছেন। কিন্তু মূল্য বৃদ্ধি হওয়ায় অনেকগুলো দোকান ঘুরে ১৪০ টাকায় আড়াইশো গ্রাম কিনেছেন তিনি। যা তার মতো মধ্যবৃত্তের জন্য অসহ্যনীয়।
বেগম পেশায় একজন ঝাড়ুদার। তিনি বলেন, আমাগো গরীবের দুঃখ বোঝার কেউ নাই। আমরা না খাইয়া মরলেও দেশের মানুষগো কিছু যাইবো-আইবো না। যে কাঁচা মরিচ আরও ১৫-২০ দিন আগ ৪০-৫০ টাকা কেজি আছিলো এখন নাকি ৬০০ টাকা! ২০ টাকার মরিচের লাইগা আসছিলাম কিন্তু একটা দোকানদারও দেয় নাই। না পাইরা ১০০ গ্রাম ১০০ টাকা দিয়া কিনলাম।
আব্দুল মজিদ নামের আরেক ক্রেতা বলেন, বাজারে আসলে বুঝা যায় মানুষ কতোটা অসহায়। আদা কেজি কাঁচা মরিচ ক্রয় করলাম ৩০০ টাকা নিলো। মরিচের চেহারা একটু সুন্দর হওয়ায় ২০ টাকা বেশি মূল্যের কিনলাম। তবে এটা অসহনীয়। দাম আরও কমানো উচিত।
সিদ্ধিরগঞ্জ পুলস্থ বাজাদের সবজির দোকানি আউয়াল জানান, আমার দোকানের মরিচ বিক্রি হয়ে গেছে। আর হয়তো আধা কেজির মতো আছে সেগুলোও কিছুক্ষণের মধ্যে শেষ হয়ে যাবে।
মূল্য বৃদ্ধি রাখার বিষয়ে তিনি বলেন, আমি বেশি রাখছি না বাজার দর যা আছে তাই রাখছি। পাইকারদের থেকে বেশি দামে কিনে তো আর কম দামে বিক্রি করতে পারবো না। প্রথমে সাড়ে ৬'শ টাকায় বিক্রি করছিলাম। এখন অল্প কয়টা আছে তাই ৬'শ দরে রাখতেছি।
চিটাগাংরোডস্থ কাঁচা বাজারের এক দোকানি বলেন, পাইকারি বাজারে মরিচ নেই। যেই কয় কেজি পাইকাররা উঠায় সেগুলোর দামও চড়া। সারা বাংলাদেশেই মরিচের দাম এখন বেশি। আমরা তো আর স্বাদে বেশি রাখি না। বেশি টাকা দিয়াও এখন মরিচ কিনে আনতে পারছি না আমরা। পাইকাররা মরিচ ছাড়তেই চায় না। আমি ৬'শ টাকা কেজিতে বিক্রি করছি।
এ বিষয়ে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের নারায়ণগঞ্জের সহকারী পরিচালক মো. সেলিমুজ্জামান জানান, আমার এখানে জনবল বলতে আমি আর আমার একজন সহকারী রয়েছে। যার কারণে সব স্থানের খোঁজখবর রাখা সম্ভব হয়না। তবে আমরা কাজ করে যাচ্ছি।
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: inbox.odhikar@gmail.com
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড