যৌতুকের জন্য গৃহবধূকে হত্যা, পুলিশি হেফাজতে স্বামী-শাশুড়ি

চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে নুসরাত আলম মিলি (২৩) নামে এক গৃহবধূর লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। গতকাল বৃহস্পতিবার (৮ জুন) সকালে উপজেলার ১৪নং হাইতকান্দি ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ডের উত্তর হাইতকান্দি গ্রামের আশরাফ আলী সওদাগর বাড়িতে এই ঘটনা ঘটে।

ওই গৃহবধূর নাম নুসরাত আলম মিলি। সে হাইতকান্দি ইউনিয়নের উত্তর হাইতকান্দি গ্রামের আশরাফ আলী সওদাগর বাড়ীর মোশাররফ হোসেনের স্ত্রী। মিলির ৪ মাস বয়সী জায়িম হোসেন নামে একটি পুত্র সন্তান রয়েছে।

এদিন সকালে মিরসরাই উপজেলা সদরের মাতৃকা হাসপাতালে লাশের সুরতহাল রিপোর্ট শেষে ময়না তদন্তের জন্য লাশ চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে। এই ঘটনায় মিলির স্বামী মোশাররফ হোসেন এবং শাশুড়ি আম্বিয়া বেগমকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়েছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, ১৮ মাস পূর্বে ৯নং মিরসরাই সদর ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ডের গড়িয়াইশ এলাকার মৃত খুরশিদ আলমের মেয়ে নুসরাত আলম মিলির সাথে হাইতকান্দি ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ডের উত্তর হাইতকান্দি গ্রামের আশরাফ আলী সওদাগর বাড়ির আবুল কাশেমের পুত্র মোশাররফ হোসেন বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। বিবাহের পর থেকে বিভিন্ন সময় শ্বশুরবাড়ির লোকজন যৌতুকের জন্য তাকে নির্যাতন করতো নুসরাত আলম মিলিকে।

মিলির মা জোসনে আরা বেগম বলেন, বিয়ের সময় যৌতুক হিসেবে দেড় লক্ষ টাকা দেওয়া হয়েছে। বিয়ের পরেও আমার মেয়েকে যৌতুকের জন্য নির্যাতন করে আসছে শ্বশুরবাড়ির লোকজন। এই পর্যন্ত ৪ ধাপে তাকে এক লাখ ৩০ হাজার টাকা দেওয়া হয়েছে। তারা আরও টাকা দাবি করে আসছে। টাকার জন্য প্রায় নির্যাতন করতো স্বামী এবং শাশুড়ি। সর্বশেষ বুধবার রাতে টাকার জন্য আমার মেয়েকে মারধর করে। টাকা দিতে না পারায় তারা আমার মেয়েকে হত্যা করে আত্মহত্যা করেছে বলে নাটক সাজাচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৬টার দিকে আমার মেয়ে মিলি ফোন করে বলে তার স্বামী টাকার জন্য রাতে তাকে অনেক মারধর করেছে। সকাল ৯টা ৪৫ মিনিটে তার স্বামী মোশাররফ হোসেন ফোন করে বলে নুসরাত মারা গেছে। তাকে আমরা মিরসরাই সদরে মাতৃকা হাসপাতালে নিয়ে এসেছি।

মিরসরাই থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) কবির হোসেন বলেন, লাশের সুরতহাল শেষে ময়না তদন্তের জন্য নুসরাত আলম মিলির মরদেহ চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে। এই ঘটনায় মিলির স্বামী মোশাররফ হোসেন এবং শাশুড়ি আম্বিয়া বেগমকে পুলিশ হেফাজতে আনা হয়েছে।