রাকিব হাসনাত, পাবনা
চাকরি করেন সরকারি স্কুলের কম্পিউটার ল্যাব এসিস্ট্যান্ট পদে, অথচ ইউনিয়ন ছাত্রলীগের পদধারী নেতা। তার রাজনৈতিক প্রভাবে ও অত্যাচারে অতিষ্ঠ পাবনা সদর উপজেলার ভাঁড়ারাবাসী। রাজনৈতিক প্রভাববিস্তার, মারধর, হুমকি-ধমকি, জমি দখলসহ নানা অভিযোগ তার বিরুদ্ধে।
অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতা জনি বিশ্বাস (২৪) পাবনা সদরের ভাঁড়ারা ইউনিয়নের চর ভাঁড়ারা গ্রামের আব্দুল জব্বার বিশ্বাসের ছেলে। তিনি চর বলরামপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের কম্পিউটার ও ল্যাব এসিস্ট্যান্ট পদে কর্মরত। একই সঙ্গে ভাঁড়ারার ৭, ৮ ও ৯ নং ওয়ার্ড সাংগঠনিক ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি।
সর্বশেষ গত বুধবার (২৪ মে) জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধের জেরে চর ভাঁড়ারা গ্রামের মো. এজেম বিশ্বাস ও তার পরিবারের সদস্যদের ব্যাপক মারধরের অভিযোগ উঠেছে।
লিখিত অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, গত ২৪ মে চর ভাঁড়ারা গ্রামের এজেম বিশ্বাস তার বাড়িতে ঘর তুলতে গেলে ছাত্রলীগ নেতা জনি বিশ্বাসের নেতৃত্বে তার লোকজন এজেম বিশ্বাসের বাড়িতে হামলা ও ভাঙচুর করেন। হামলার পর বাড়িঘরে লুটপাটও অভিযোগ উঠে। এ ঘটনায় আজম বিশ্বাস (৬০), রউফ (৪০), আব্দুল হাই (৩০), এজেমসহ (৪০) ছয়জন গুরুতর আহত হোন।
গুরুতর আহতাবস্থায় পাবনা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত আহতরা হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
অভিযোগ সূত্রে আরও জানা গেছে, চার বছর আগে পাবনা সদর উপজেলার জালালপুরে এক মেয়েকে অপহরণ করতে গিয়ে গণপিটুনিতে গুরুতর আহত হন ছাত্রলীগ নেতা জনি। ওই ঘটনায় মো. সাইফুল ইসলাম নামে তার এক বন্ধু নিহত হন। জমি দখলকে কেন্দ্র করে গত বছরের চর ভাঁড়ারার মো. আতাহার বিশ্বাস ও তার স্ত্রীকে বেধড়ক মারধরের অভিযোগ উঠে।
এছাড়াও বিভিন্ন সময় এই ছাত্রলীগ নেতার বিরুদ্ধে রাজনৈতিক প্রভাববিস্তার, মারধর, হুমকি-ধমকি, জমি দখলসহ নানা অভিযোগ উঠেছে। তার ভয়ে কেউ প্রকাশ্যে মুখ খুলতে সাহস পান না।
ভাঁড়ারার শাহী মসজিদ এলাকার নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন বলেন, জনি আমাদের এলাকার ছোট মানুষ হলেও তার অত্যাচারে আমরা অতিষ্ঠ হয়ে উঠছি। কথায় কথায় মানুষকে মারধর করেন। আর ক্ষমতার দাপট দেখায়। জমি দখল, চাঁদাবাজিসহ নানা অপরাধে তিনি জড়িয়ে পড়েছেন। আমরা তাকে অবিলম্বে গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।
অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতা জনির বক্তব্য জানতে মুঠোফোনে কল করা হলে সাংবাদিক পরিচয় পেয়ে তিনি ফোন কেটে দেন। পরে অনেকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। মুঠোফোনে ক্ষুদে বার্তা পাঠিয়েও কোনো উত্তর পাওয়া যায়নি।
এ বিষয়ে পাবনা জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি মিজানুর রহমান সবুজ বলেন, জনির বিষয়ে খোঁজখবর নিয়ে প্রয়োজনীয় সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ছাত্রলীগ করে দলের নাম ভাঙিয়ে এলাকায় প্রভাব খাটিয়ে নিরীহ মানুষের প্রতি অত্যাচার করার সুযোগ নেই। যেহেতু তার বিরুদ্ধে অভিযোগ আসছে তাই গুরুত্বের সঙ্গে বিষয়টি দেখা হবে। ছাত্রলীগ করে পদে থেকে চাকরি করে কিভাবে সেটিও আমরা খতিয়ে দেখব।
ভাঁড়ারা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সুলতান মাহমুদ খান বলেন, ওই এলাকায় বেশকিছু দিন ধরে অস্থিরতা বিরাজ করছে। উভয়পক্ষই আমার কাছে আসছিল। সমাধানের জন্য উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
পাবনা সদর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কৃপা সিন্দু বালা বলেন, ভাঁড়ারা এলাকায় জমিজমা সংক্রান্ত বিষয়ে আমরা প্রথমে অভিযোগ পেয়েছিলাম। এরপর জনিসহ বেশ কয়েকজনের নামে থানায় মামলা নথিভুক্ত করা হয়েছে।
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: inbox.odhikar@gmail.com
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড