কাজী শাহরিয়ার রুবেল, আমতলী (বরগুনা)
বরগুনার আমতলীতে গত চারদিনের ভারী বর্ষণ ও কিছু এলাকায় শিলা বৃষ্টির কারণে তরমুজ ক্ষেত তলিয়ে গেছে। এতে বিপাকে পড়েছেন উপজেলার অধিকাংশ তরমুজ চাষিরা। রোপণকৃত তরমুজ গাছ ও ফলন পচে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এতে কোটি কোটি টাকার ক্ষতি হবে বলে জানিয়েছেন ভুক্তভোগী কৃষকরা।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, আমতলী উপজেলায় এ বছর ছয় হাজার ২৪০ হেক্টর জমিতে তরমুজের আবাদ হয়েছে। যা গত বছরের চেয়ে দ্বিগুণেরও বেশি। তরমুজ চাষিদের অক্লান্ত পরিশ্রম ও আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এ বছর তরমুজের ফলন ভালো হয়েছে।
কিছুকিছু চাষি আগাম তরমুজের চাষ করায় সেই ক্ষেতের তরমুজ বাজারে বিক্রিও করেছেন। আর অধিকাংশ চাষির ফলনকৃত তরমুজ আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে কেটে তা বিক্রি করার উপযোগী হওয়ার কথা। কিন্তু গত চার দিনের ভারী বর্ষণে তরমুজ চাষিরা মহাবিপাকে পড়েছেন।
বৃষ্টির পানিতে তাদের তরমুজ ক্ষেতগুলো তলিয়ে গেছে। বৃষ্টি আরও দুই একদিন স্থায়িত্ব হলে সর্বস্বান্ত হয়ে যাবে কৃষক ও তরমুজ চাষিরা। এতে চাষিরা অন্তত কয়েকশত কোটি টাকার ক্ষতির সম্মুখীন বলে জানিয়েছেন।
সরেজমিনে উপজেলার কয়েকটি তরমুজ ক্ষেত ঘুরে দেখা গেছে, বৃষ্টির পানিতে তরমুজ ক্ষেতগুলো তলিয়ে গেছে। অনেক ক্ষেতে পানি জমে থাকতে দেখা গেছে। অনেক এলাকায় বৃষ্টির সাথে শিলা পড়ার কারণে তরমুজ নষ্ট হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। অনেক স্থানে চাষিরা তাদের ক্ষেতে জমে থাকা পানি নিষ্কাশনের কাজ করছেন।
উপজেলার হলদিয়ার টেপুরা গ্রামের কৃষক মো. আবু সালেহ বলেন, চলতি মৌসুমে তরমুজ চাষ করে ফলনও ভালো হয়েছে। হঠাৎ ভারী বর্ষণ ও শিলা বৃষ্টির কারণে পানিতে তরমুজ ক্ষেত তলিয়ে গেছে। ওই কারণে বেশ দুশ্চিন্তায় আছি। এভাবে বৃষ্টি অব্যাহত থাকলে ভুক্তভোগী তরমুজ চাষিদের পথে বসে যেতে হবে এবং কোটি কোটি টাকার ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
আঠারোগাছিয়ার তরমুজ চাষি মো. মনিরুল ইসলাম বলেন, গত কয়েক দিনের ভারী বর্ষণ ও শিলা বৃষ্টির কারণে তরমুজ ক্ষেত তলিয়ে গেছে। গতকাল রাতে সেচ দিয়ে ক্ষেতের পানি নিষ্কাশন করেছি। আজ দুপুরে আবার বৃষ্টি হয়ে অতিরিক্ত পানি জমে আছে তরমুজ ক্ষেতে। এতে গাছ ও তরমুজ নষ্ট হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তাই বিভিন্ন মাধ্যমে সেচ দিয়ে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করছি।
এ দিকে খেপুপাড়া আবহাওয়া অফিসের একটি সূত্র জানায়, অফিসের মেঘের মানচিত্র বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, বঙ্গোপসাগরে নিম্নচাপ সৃষ্টি হওয়ার কারণে উপকূলীয় বিভিন্ন অঞ্চলে আগামী কয়েকদিন ভারী বৃষ্টিপাত আর ঝড় বাতাসের প্রভাব থাকতে পারে। তবে দ্রুত আবহাওয়া স্বাভাবিক হতে শুরু করবে। নিম্নচাপের প্রভাবে চলমান এই বৃষ্টিপাত থাকতে পারে আরও কয়েক দিন।
আমতলী উপজেলা কৃষি অফিসার সিএম রেজাউল করিম বলেন, গত বছরের চেয়ে চলতি বছরে দ্বিগুণেরও বেশী জমিতে তরমুজের আবাদ হয়েছে। ফলনও ভালো হয়েছে। কিন্তু চার দিনের অব্যাহত মুষলধারে ভারী বর্ষণ ও শিলা বৃষ্টিতে তরমুজ ক্ষেতের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। ক্ষেতে পানি জমে থাকায় কৃষকরা আতংকে রয়েছে। আমাদের কৃষি বিভাগের মাঠ কর্মীরা মাঠে থেকে কাজ করে ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণের চেষ্টা করছেন।
যদিও দ্রুত ক্ষেত থেকে পানি নিষ্কাশনের জন্য চাষিদের পরামর্শ দেয়া হয়েছে। অন্যথায় গাছ ও ফল দুটোই পচে নষ্ট হয়ে যাবে।
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: inbox.odhikar@gmail.com
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড