• শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১  |   ২৮ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

অবৈধ ৩১ ইটভাটার দখলে মনিরামপুর (পর্ব-১)

  মোস্তাকিম সাকিব, মনিরামপুর (যশোর)

২১ মার্চ ২০২৩, ১৩:৫৪
অবৈধ ৩১ ইটভাটার দখলে মনিরামপুর (পর্ব-১)
অবৈধ ইটভাটায় ইট তৈরি হচ্ছে (ছবি : অধিকার)

যশোরের মনিরামপুর উপজেলায় বিভিন্ন স্থানে গড়ে উঠেছে অবৈধ ইট ভাটা। অনেক স্থানে কয়লার বদলে পুড়ানো হচ্ছে কাঠ। নষ্ট হচ্ছে আবাদি জমি, পরিবেশ হারাচ্ছে তার স্বাভাবিক ভারসাম্য। দেশে আইন থাকলেও প্রয়োগ না থাকায় জনমনে নানা প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।

প্রতিদিনই মনিরামপুর উপজেলার বিভিন্ন গ্রামের আবাদি জমি থেকে মাটি ব্যবসায়ীরা ট্রলি করে পাকা রাস্তার ওপর দিয়ে হাজার হাজার মাটির গাড়ি নিয়ে ভাটায় মাটি বিক্রি করছে। ফলে রাস্তার ওপর মাটি পড়ে সড়ক দুর্ঘটনাও ঘটছে।

অধিকাংশ ইটভাটায় পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র ও বৈধ কাগজপত্র নেই। তাছাড়া নিয়ম মেনে তৈরি করা হয়নি কোন ইটভাটা কিন্তু ইটভাটার অসাধু মালিকগন বিভিন্ন পথ অবলম্বন করে তাদের ইটভাটার কাজ চলমান রেখেছে। পরিবেশে সবুজের পরিমাণ বাড়াতে ও কার্বন ডাই অক্সাইডের পরিমাণ কমাতে বৃক্ষরোপণের আওতায় আনা হয়েছে গোটা দেশকে কিন্তু এ যেন স্রোতের মুখে বালির বাধ!

প্রাপ্ত তথ্য মতে- মনিরামপুর উপজেলার বেশিরভাগ ইটভাটারই পরিবেশ অধিদপ্তরের বৈধ কাগজপত্র নেই। প্রভাবশালীরা বিভিন্ন ক্ষমতার জের ধরে এসব ইট ভাটা চালিয়ে যাচ্ছে। গড়ে তুলেছে ইটভাটা মালিক সমিতি। এমনিতে ভাটার চিমনি তৈরিতে সরকারি নির্দেশনা থাকলেও ইটভাটা মালিকরা ১২০ ফুটের পরিবর্তে ৬০/৮০ ফুট চিমনি ব্যবহার করছে। সরকারি নির্দেশ ইট পোড়ানো নিয়ন্ত্রণ আইন ১৯৮৯ ও ২০০১ সালের ১৭ নং অনুচ্ছেদের ৪ ও ৫ ধারায় উল্লেখ রয়েছে যে, আবাদি জমিতে কোন ইটভাটা তৈরি করা যাবে না। ১২০ ফুট উঁচু চিমনি ব্যবহার করতে হবে।

এছাড়াও ইটভাটা আইন-২০১৩ এবং সংশোধনী ২০১৯ এর ৮ ধারায় কতিপয় স্থানে ইটভাটা স্থাপন নিষিদ্ধ করা ও নিয়ন্ত্রণ আইনে সুস্পষ্টভাবে উল্লেখ আছে আবাসিক, সংরক্ষিত বা বাণিজ্যিক এলাকা, সিটি কর্পোরেশন, পৌরসভা বা উপজেলা সদর, সরকারি বা ব্যক্তিমালিকানাধীন বন, অভয়ারণ্য, বাগান বা জলাভূমি, কৃষি জমিসহ প্রতিবেশগত সংকটাপন্ন এলাকায় ইট ভাটা স্থাপন করতে পারবে না। ২০১৯ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারির পর থেকে অতীতে ও অন্য আইনে যাই থাকুক বিশেষ স্থাপনা, রেলপথ, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, হাসপাতাল, ক্লিনিক গবেষণাগার প্রভৃতি এলাকা থেকে কমপক্ষে এক কিলোমিটার দূরে ইটভাটা স্থাপন করা যাবে। নতুবা তা অবৈধ হবে। তাছাড়া জনবসতি এলাকা কৃষি জমিতেও ভাটা স্থাপন করা যাবে না।

সরকারি সকল নির্দেশনা উপেক্ষা করে এসব ইটভাটা রমরমা ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। স্কুল, কলেজ, বাজারের পাশে অথবা আবাদি জমির ওপর গড়ে ওঠা এসকল ইটভাটা থেকে নির্গত কালো ধোয়ায় নষ্ট হচ্ছে পরিবেশ। স্কুল কলেজ বা বাজারের পাশে ভাটা তৈরিতে ছাত্র ছাত্রী অথবা সাধারণ মানুষদের শ্বাসকষ্ট, হাঁপানি, ক্যান্সারসহ নানা রোগে ভুগতে হচ্ছে। এছাড়াও প্রতিদিন রাস্তার উপর দিয়ে মাটির গাড়ি চলার কারণে রাস্তার উপর মাটি পড়ে নষ্ট হয়েছে রাস্তাঘাট। হালকা বৃষ্টিতে যে কোনো সময়ে ঘটতে পারে বড় ধরনের দুর্ঘটনা!

এ বিষয়ে মনিরামপুর ভাটা মালিক সমিতির সভাপতি হাজী বাবর আলীর সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে তিনি অধিকারকে জানান- বৈধ কাগজপত্র বিহীন মনিরামপুর উপজেলায় মোট ৩১টা ইট ভাটা চালু আছে। তার দাবি- পরিবেশ অধিদপ্তর নতুন করে সনদ নবায়ন করছে না।

আরও পড়ুন : অবৈধ ৩১ ইটভাটার দখলে মনিরামপুর (পর্ব-২)

সর্বশেষ পরিবেশ অধিদপ্তরের আইন অনুযায়ী ইটভাটাগুলো পরিচালিত হচ্ছে কি-না এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন- সর্বশেষ আইন করার পর আর কোন নতুন ভাটা মনিরামপুরে তৈরি হয়নি এবং চলমান সকল ভাটাগুলো সংশোধনী আইনের পূর্বে তৈরি করা।

আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি দৈনিক অধিকারকে জানাতে ই-মেইল করুন- inbox.odhikar@gmail.com আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: inbox.odhikar@gmail.com

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড