• বুধবার, ১৭ এপ্রিল ২০২৪, ৪ বৈশাখ ১৪৩১  |   ২৭ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

রাঙামাটির তরমুজ জেলা ছাড়িয়ে যাচ্ছে গোটা দেশে

  এম. কামাল উদ্দিন, সিনিয়র স্টাফ রিপোর্টার (রাঙামাটি)

১৭ মার্চ ২০২৩, ১২:৩৭
রাঙামাটির তরমুজ জেলা ছাড়িয়ে যাচ্ছে গোটা দেশে

রাঙামাটির তরমুজ জেলা ছাড়িয়ে বাজারজাত হয়ে যাচ্ছে চট্টগ্রাম, ঢাকাসহ বাইরের বিভিন্ন জেলায়। সদরসহ জেলা, উপজেলার স্থানীয় হাটবাজারে এখন রাঙামাটিতে উৎপাদিত প্রচুর আগাম তরমুজ। ইতোমধ্যে প্রতিদিন বাজারে আনা হচ্ছে টসটসে রসালো প্রচুর তরমুজ। এবার মৌসুমে জেলায় তরমুজের বাম্পার ফলনের আশা করা হচ্ছে।

রাঙামাটি কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর জানায়, কৃষকদের প্রশিক্ষণসহ মাঠ পর্যায়ে বিভিন্ন সহায়তা ও পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছেন অধিদপ্তরের মাঠ পর্যায়ের কর্মীরা। বাঘাইছড়ি, লংগদু, নানিয়ারচর, বরকল, বিলাইছড়ি ও জুরাছড়ি উপজেলায় উৎপাদিত প্রচুর তরমুজ স্থানীয় হাটবাজার ছাড়াও দেশের বিভিন্ন স্থানে বাজারজাত হয়ে যায়। এ জেলায় টোফেল, গ্লোরি ও চ্যাম্পিয়ন জাতের তরমুজের বীজ আবাদ করা হয়ে থাকে।

এ মৌসুমে জেলায় ২০০ হেক্টর জমিতে তরমুজের আবাদ হয়েছে। এর প্রতি হেক্টরে ৪০ টন উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা চিহ্নিত করা হয়েছে।

জানা যায়, মূল মৌসুমের আগেই রাঙামাটির বিভিন্ন পাহাড়ি এলাকায় প্রচুর আগাম তরমুজের ফলন পাচ্ছেন কৃষকরা। বড় মাঝারি ছোট- যে কোনো আকারের তরমুজ টসটসে। স্বাদে মিষ্টি ও রসালো।

প্রতিবছর শুষ্ক মৌসুমে কাপ্তাই লেকের পানি কমে গেলে প্রচুর আবাদযোগ্য জমি ভেসে ওঠে। এসব জলেভাসা জমিতে প্রচুর তরমুজের আবাদ করেন স্থানীয় চাষিরা। এবার মৌসুমে অভাবনীয় লাভের মুখ দেখতে পাচ্ছেন চাষিরা। মুনাফার যথেষ্ট পরিমাণ অংশ লুফে নিচ্ছেন মধ্যস্বত্বভোগীরাও। উপযুক্ত আবহাওয়া, জমির উর্বরতা এবং আধুনিক প্রযুক্তির চাষাবাদের কারণে রাঙামাটিতে প্রতিবছর তরমুজের বাম্পার ফলন পাওয়া যাচ্ছে বলে জানান কৃষিবিদরা।

বাজার ঘুরে দেখা যায়, উৎপাদন প্রচুর হওয়ায় স্থানীয় হাটবাজারে তরমুজের দাম অনেকটা সুলভ। এতে ভোক্তা ও কৃষক উভয়ে লাভবান হচ্ছেন। এখানকার উৎপাদিত তরমুজের ব্যাপক কদর থাকায় ব্যবসায় ঝুঁকছেন মৌসুমি পাইকার ও স্থানীয় ব্যবসায়ীরা। বর্তমানে স্থানীয় বাজারে বড় ও মাঝারি আকারের প্রতি তরমুজ বিক্রি হচ্ছে ১০০-২০০ টাকা এবং ছোট আকারের তরমুজ ৬০-১০০ টাকায়।

জুরাছড়ি উপজেলার কৃষক রতন চাকমা বলেছেন, আমাদের এখানের তরমুজ সুস্বাদু হয়। এ বছর আগাম এবং ভালো ফলনের কারণে তরমুজের দাম ভালো পাচ্ছি। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় তরমুজ খুব দ্রুত বড় হয়েছে। তাই আগাম ফলন হওয়ায় ভালো দাম পাওয়া যাচ্ছে। জলেভাসা জমিতে বছরে ৪/৫ মাস তরমুজের আবাদ করা যায়। বাকি সময়ে জমি পানিতে ডুবে থাকে।

লংগদু উপজেলার কাট্টলী এলাকার কৃষক রহিম উদ্দিন বলেন, এবার তরমুজের আগাম ফলনে দাম ভালো পাচ্ছি। কিছু কিছু তরমুজের পরিপক্ব বীজ ধরা না পড়ায় আমাদের অনেক জমিতে ফলন তেমন হয়নি। যদি শতভাগ পরিপক্ব বীজ হলে তরমুজের ফলন আরও বাড়ত।

পাইকারি ব্যবসায়ী রুহুল আমিন জানান, তিনি রাঙামাটি থেকে পাইকারি তরমুজ কিনে চট্টগ্রামের আড়তে নিয়ে যান। এ মৌসুমে তরমুজের আগাম ফলন হওয়ায় চট্টগ্রামে ভালো দাম পাওয়া যাচ্ছে।

রাঙামাটি কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের ভারপ্রাপ্ত উপ-পরিচালক আপ্রু মারমা ও সহকারী উপ-পরিচালক রবিন চাকমা বলেছেন, বেশিরভাগ তরমুজের চাষাবাদ ও ফলন হচ্ছে জেলার লংগদু উপজেলায়। কয়েক বছর ধরে সদর উপজেলাতেও তরমুজের আবাদ চলছে। জেলা সদরে এবার মৌসুমে ৪০ হেক্টর জমিতে তরমুজের আবাদ করা হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, আমরা আশা করছি, এবার মৌসুমে তরমুজের বাম্পার ফলন পাওয়া যাবে। কৃষকরা আর্থিকভাবে যথেষ্ট লাভবান হবেন। এ বছর জেলায় তরমুজের ভালো ফলন হয়েছে। এখন আমরা যেটা বাজারে পাচ্ছি, সেটা তরমুজের আগাম ফলন। মূল মৌসুমের ফলনটা বাজারে আসবে এপ্রিলে।

আগাম ফলনে চাষিরা ভালো দাম পাচ্ছেন। জেলায় ২৫০ হেক্টর জমিতে তরমুজের আবাদ হয়েছে। উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ৭ হাজার ৫০০ টন।

আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি দৈনিক অধিকারকে জানাতে ই-মেইল করুন- inbox.odhikar@gmail.com আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: inbox.odhikar@gmail.com

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড