• শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১  |   ৩২ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

গালগল্পেই সীমাবদ্ধ ‘নো হেলমেট, নো পেট্রোল’

পাম্পের হেলমেট ধার নিয়ে তেল নিচ্ছেন চালকরা

  মো. রেজোয়ান ইসলাম, নীলফামারী

০৮ ডিসেম্বর ২০২২, ১৬:০৯
পাম্পের হেলমেট ধার নিয়ে তেল নিচ্ছেন চালকরা
পাম্প থেকে তেল নিচ্ছেন চালকরা (ছবি : অধিকার)

নীলফামারীর সড়কে প্রায়ই ঘটছে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনা। অকালে প্রাণ হারাচ্ছেন অনেকে আবার কেউ কেউ করছেন পঙ্গুত্ব বরণ। দুর্ঘটনা থেকে মোটরসাইকেল চালকদের রক্ষা করতে হেলমেট ব্যবহার বাধ্যতামূলক করতে জেলায় ‘নো হেলমেট, নো পেট্রোল’ কর্মসূচি শুরু করেছে পুলিশ।

পেট্রোল পাম্প মালিক সমিতির সঙ্গে পুলিশ প্রশাসনের বৈঠকে এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। তবে এ কর্মসূচি চালুর এক সপ্তাহের মধ্যে পুলিশের দেওয়া নো হেলমেট নো পেট্রোল নির্দেশনা মানছেন না ফিলিং স্টেশন মালিকরা।

জানা গেছে, গত ২৭ নভেম্বর পেট্রোল পাম্প মালিকদের সাথে জেলা পুলিশ সুপার মোস্তাফিজুর রহমান বৈঠক করে সকলের সম্মতিতে এই সিদ্ধান্ত নেন। পরে ১ ডিসেম্বর থেকে নীলফামারীর পেট্রোল পাম্পগুলোতে চালু হয় এ নিয়ম। তবে সপ্তাহ যেতে না যেতেই পেট্রোল পাম্প মালিকরা মোটরসাইকেল চালকদের হেলমেট ছাড়া দিচ্ছেন জ্বালানি। অনেকে ফিলিং স্টেশনের হেলমেট ধার নিয়ে মোটর সাইকেলে নিচ্ছেন তেল পেট্রোল। কেইবা আবার ড্রামে করে ফিলিং স্টেশন থেকে নিয়ে যাচ্ছেন জ্বালানি।

এ দিকে পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে নির্দেশনা মানছে পাম্প মালিকরা, চলছে অভিযান। অন্যদিকে মুদি দোকানে বোতলেই মিলছে জ্বালানি তেল। যেখানে নেই পরিমাপের কোন বালাই, নেই তদারকি।

জেলার একাধিক ফিলিং স্টেশন ঘুরে দেখা গেছে, হেলমেট ছাড়া অনেকেই মোটরসাইকেলে তেল নিতে আসছেন ফিলিং স্টেশনে। পাম্পেই হেলমেট রেখে অভিনব কৌশলে তেল বিক্রি করতে দেখা গেছে ফিলিং স্টেশন গুলোতে। এছাড়াও ড্রামে করে বোতলে বিক্রির জন্য পাম্প থেকে জ্বালানি কিনে নিয়ে যাচ্ছেন বিভিন্ন এলাকার মুদি দোকানিরা।

জেলা শহরের পাঁচ মাথা বাইপাস এলাকার ভাই ভাই ফিলিং স্টেশনে হেলমেট ছাড়াই মোটরসাইকেলে তেল নিতে এসেছেন সদর উপজেলার রামগঞ্জ এলাকার আনোয়ারুল ইসলাম।

তিনি আরও বলেন, রংপুর থেকে আসলাম আমাকে বাড়ির লোক মোটরসাইকেলে নিতে এসেছে। যে বাড়ি থেকে নিতে এসেছে সে ভুলে হেলমেট নিয়ে আসেনি, এজন্য হেলমেট নাই। তবে পাম্পের হেলমেট মাথায় দিয়ে তেল নিলাম। বিপদ তো বলে কয়ে আসেনা। এ জন্য মাঝে মধ্যে ছাড় দেওয়া উচিৎ।

আলু ব্যবসায়ী আনোয়ার হোসেন বলেন, আমার বাড়ি কিশোরগঞ্জ, সকালে বাড়ি থেকে বের হওয়ার সময় হেলমেট আনতে ভুলে গেছি। তবে পাম্পের মধ্যে হেলমেট পাওয়ায় অসুবিধা হয়নি। কিন্তু হেলমেটটা নিজের জন্য ব্যবহার করা দরকার আর এমন ভুল হবে না।

ভাই ভাই ফিলিং ষ্টেশনের ম্যানেজার নজরুল ইসলাম বলেন, হেলমেট ধার করে তেল দেওয়া নেওয়া কোনো বিষয় না। সিসিটিভির ভিতরে হেলমেট পড়ে তেল নিলেই হলো। যা করার আছে করেন।

নীলফামারী সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুর রউপ দৈনিক অধিকারকে বলেন, পাম্প মালিকরা তো নির্দেশনা মানছেন। আমাদের অভিযান অব্যাহত আছে। পাম্পে হেলমেট রেখে তেল বিক্রি করার বিষয়টি আপনার কাছে শুনলাম, আমরা খোঁজ নিয়ে বিষয়টা দেখছি।

নীলফামারী জেলা পুলিশ সুপার মোস্তাফিজুর রহমান দৈনিক অধিকারকে বলেন, আমাদের অভিযান অব্যাহত আছে। পাম্প মালিকদের সাথে মিটিংয়ে তারা আমাদের কথা দিয়েছে নির্দেশনা মানবেন। বিভিন্ন দোকানে জ্বালানি তেল বিক্রির বিষয়টি দেখা হবে। আর পুরো জেলাজুড়ে হেলমেট বিহীন মোটরসাইকেল ধরার অভিযান কঠোরভাবে চলছে। এক মাসে হাজারের উপরে হেলমেট ও কাগজপত্র বিহীন মোটরসাইকেল মামলা হয়েছে।

আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি দৈনিক অধিকারকে জানাতে ই-মেইল করুন- inbox.odhikar@gmail.com আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: inbox.odhikar@gmail.com

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড